Saturday, April 11, 2015

ভ্রমনের আগে গোছগাছ


ভ্রমণে যাওয়ার অতি উচ্ছ্বাস আর আনন্দে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। আগেভাগে গোছগাছের কাজটি ঠিকভাবে সেরে নিলে ভ্রমণের পুরো সময়ই ভালো ও সুস্থ থাকা যায়। ফলে আপনার ভ্রমণটি হয়ে উঠবে স্মৃতি ও আনন্দময়।
বন্ধু কিংবা পরিবারের সবাইকে নিয়ে ভ্রমণে যাওয়ার আনন্দই আলাদা। আজকের এ লেখা যখন আপনার হাতে_ হতে পারে আপনি তখন ব্যাগপত্র গুছিয়ে ভ্রমণে। 'হতে পারে বাসে কিংবা ট্রেনে।' অথবা প্রস্তুতি নিচ্ছেন বেরিয়ে পড়ার।

ভ্রমণকে নিরাপদ ও আরামদায়ক করতে ভ্রমণের আগে পরিকল্পনা, এলাকা সম্পর্কে জানা, নিজের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য বিষয়ে সতর্কতা গ্রহণ করতে হয়। ভ্রমণরত অবস্থায় পূর্ব পরিকল্পনার সঙ্গে বাস্তবতার কোনো অমিল বা পথঘাট সম্পর্কে ধারণা না থাকায় আপনাকে বেশ অস্বস্তিতে ফেলতে পারে। কখনো কখনো ভ্রমণ পথেই অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। তখন ভ্রমণটাই হয়ে উঠবে তিক্তময়। আর মাটি হয়ে যাবে সব আনন্দ। এমন বাজে পরিস্থিতির হাত থেকে বাঁচার জন্য কিছু টিপস্ ।

ভ্রমণের সময় কিছু কিছু সমস্যা আছে যেগুলো কমবেশি সবারই হতে পারে। যেমন_ মাথাব্যথা, পেটের সমস্যা, ঘুমের অসুবিধা, সর্দি-কাশি, জ্বর-বমি ইত্যাদি। এর মধ্যে পেটের সমস্যায় অধিকাংশ মানুষ ভোগে। এর প্রধান এবং অন্যতম কারণ_ খাবার-দাবার ও পানি। ভ্রমণের সময় সবচেয়ে ভালো সেদ্ধ খাবার খাওয়া। এর সঙ্গে খাওয়া যেতে পারে ফলমূল ও শাক-সবজি; বিশেষত যেসব ফল খোসা ছাড়িয়ে বা কেটে খেতে হয়, যেমন- কলা, আম, তরমুজ, পেঁপে ইত্যাদি।

ভ্রমণে এসিডিটি হতে পারে। আগে থেকেই এসিডিটির ওষুধ সঙ্গে রাখুন। * উচ্চ রক্তচাপের রোগীরাও বিশেষ সতর্ক থাকবেন। ভ্রমণের দু'একদিন আগে ব্যক্তিগত চিকিৎসকের চেম্বার ঘুরে আসুন। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও একই পরামর্শ। ডায়াবেটিস রোগীরা ভ্রমণকালীন সঙ্গে গ্লুকোজ গোলানো পানির বোতল রাখুন। সুগার কমে 'হাইপোগ্লাইসোমিয়া' হয়ে যেতে পারে যে কোনো সময়। হাতের কাছে বিশুদ্ধ পানির বোতল রাখুন। অনিরাপদ পানি পান করবেন না। আপনার ব্যক্তিগত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কমন কিছু এন্টিবায়েটিকসহ জরুরি কিছু ওষুধ সঙ্গে রাখুন।

একটি ট্রাভেল কিট বানিয়ে নিতে পারেন যেখানে থাকবে প্রয়োজনীয় ওষুধসহ, গজ, ব্যান্ডেজ, অ্যান্টিসেপটিক মলম বা সলিউশন।

ভ্রমণের ধরন এবং আবহাওয়া অনুযায়ী পোশাক নির্বাচন করুন। জুতার ব্যাপারে বাড়তি মনোযোগ প্রয়োজন। আরামদায়ক কেডস হলে ভালো হয়। মেয়েরা হিল জুতা ব্যবহার না করলেই ভালো। আপনার এলার্জি আছে এমন খাবারের নাম মনে রাখুন।

ভ্রমণ শুরু করার আগে ভরপেট না খাওয়া ভালো। ভ্রমণে শিশু সঙ্গে থাকলে তাকে ঘুমাতে উৎসাহিত করুন। বিশেষ কোনো অসুখ থাকলে প্রয়োজনীয় ওষুধ সঙ্গে নেবেন। গর্ভবতী মহিলারা ডাক্তারের পরামর্শ মেনে ভ্রমণ করবেন। যানবাহন চলাকালে কোনো বই বা খবরের কাগজ পড়বেন না। এতে চোখের ওপর চাপ পড়বে। দীর্ঘ ভ্রমণে পা দুটো যতটা সম্ভব ছড়িয়ে বসবেন । মাঝে মাঝে পা নাড়াচাড়া করুন যাতে রক্ত চলাচল ঠিক থাকে। দীর্ঘ ভ্রমণের আগে ডাক্তার দেখিয়ে আপনার স্বাস্থ্য ঠিক আছে কিনা নিশ্চিত হোন ।

 নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে

ভ্রমণ এলাকা সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিন। জেনে নিন কোনো নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি রয়েছে কিনা। ওই এলাকার মানুষ কেমন রীতিনীতি মেনে চলেন_ এমন রীতিনীতি জেনে নিন। ভ্রমণ এলাকায় কোনো রোগের প্রাদুর্ভাব আছে কিনা তা জেনে নিন। ভ্রমণ এলাকার লোকদের রীতিনীতিকে আহত করে এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকুন। আবাসিক হোটেল সম্পর্কে সচেতন হোন । যদি মূল্যবান কোনো বস্তু বা বেশি টাকা সঙ্গে থাকে তাহলে খোঁজ নিয়ে একটি ভালো নিরাপদ হোটেলে উঠুন। ভ্রমণের পরিকল্পনা অপরিচিত লোকের সঙ্গে শেয়ার করবেন না এবং তাদের কাছ থেকে কোনো উপহার গ্রহণ করবেন না।

নির্ধারিত স্টেশন ছাড়া অন্য স্থান থেকে বাস, ফেরি, নৌকা ইত্যাদিতে উঠানামা বর্জন করুন।

ভ্রমণ মানেই হলো পেছনের যত অবসাদ আছে তা ঝেড়ে ফেলে সামনের কাজের জন্য শক্তি সঞ্চয় করা। তাই ভ্রমণের সময় অসুখ বাঁধিয়ে সামনের দিনগুলো যেন নষ্ট না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। সবকিছু সুন্দর করে গুছিয়ে, সুন্দর মনে পরিবারের সদস্য কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে বেরিয়ে পড়ুন ভ্রমণের উদ্দেশ্যে।

0 comments:

Post a Comment