Sunday, April 12, 2015

ঈদের ছুটিতে মধুচন্দ্রিমা


বান্দরবানের এই সবুজ প্রকৃতি চোখ জুড়িয়ে দেবে। চারদিকে পাহাড়, নৌকায় করে স্বচ্ছ পানির ওপর দিয়ে ছুটে চলা। মাঝেমধ্যে দু-একটি করে বক ও নাম না-জানা হরেক রকম পাখি উড়ে যাচ্ছে। কখনো কখনো দু-একটি গুইসাপ পানি সাঁতরে পার হচ্ছে। এর সঙ্গে রয়েছে মনোরম পরিবেশ। নির্জন জায়গায় সঙ্গীসহ আপনি। মধুচন্দ্রিমার কল্পনায় এমন জায়গাটাই তো মানানসই।

অন্য কোথাও
সঙ্গীসহ আপনি প্রচলিত বেড়ানোর জায়গার বাইরেও ঢাকার অদূরে সোনারগাঁ বারভুঁইয়াদের অন্যতম ঈশা খাঁর রাজধানী সোনারগাঁ ও পানামনগর দেখে আসতে পারেন।
ঢাকা বা ময়মনসিংহ থেকে রওনা হয়ে নেত্রকোনায় পৌঁছানোর আগে শ্যামগঞ্জ বাজার থেকে বাঁ দিকে চলে গেছে যে সড়কটি, সেটি দিয়েই যেতে পারেন বিরিশিরি বা সুসং দুর্গাপুর। সোমেশ্বরী নদীর পাড়ে পৌঁছালেই মনে হবে, এ এক ভিন্ন জগৎ।
যেতে পারেন রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিবিজড়িত শিলাইদহে। পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার আসলে নামেই পাহাড়, নওগাঁর বদলগাছী থানায় অবস্থিত এটি।
লালমাটিঘেরা ময়নামতি কুমিল্লা শহর থেকে প্রায় আট কিলোমিটার পশ্চিমে। এখানে রয়েছে বৌদ্ধবিহারের ধ্বংসাবশেষ এবং সেখান থেকে পাওয়া প্রত্নবস্তু। একই সঙ্গে পাহাড় আর জলের যুগলবন্দী চোখ জুড়িয়ে দেয়।

চেনাজানায়…
রাঙামাটি শহরটা এক দিনেই ঘুরে দেখা সম্ভব। বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিন। পানির স্বচ্ছতা ভেদ করে আপনি এখানে অসংখ্য প্রবাল দেখতে পাবেন। দ্বীপটিতে নারকেলগাছের আধিপত্যের কারণে একে নারকেল জিঞ্জিরাও বলা হয়। পানির স্বচ্ছতা এবং চারপাশের স্বর্গীয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আপনাদের মুগ্ধ করবে। আঁকাবাঁকা পথ ধরে যেতে যেতে দেখবেন, একদিকে সুউচ্চ পাহাড়, অন্যদিকে গভীর খাদ। এই খাদের গভীর থেকে উঠে এসেছে নানা ধরনের গাছ। সবুজের এই বিপুল সমারোহ আপনার চোখকে দেবে প্রশান্তি, ভরিয়ে দেবে মন। এই হলো বান্দরবান। এ ছাড়া দেখার মতো বাংলাদেশে রয়েছে অনেক জায়গা। বিশ্বখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিত্রা হরিণের আবাস সুন্দরবন, পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজার; পাহাড়পুর, মহাস্থানগড়, দিনাজপুরের স্বপ্নপুরী, রামসাগর, তেঁতুলিয়া, কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতের সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত, রাঙামাটি, বান্দরবান, চিম্বুক পাহাড়, সেন্ট মার্টিন, সিলেটের চা-বাগান, মাধবকুণ্ডের ঝরনা, জাফলং, জৈন্তা, খাসিয়াপল্লী—এসব জায়গায় অথবা আপনার পছন্দের কোনো জায়গা থেকে বেড়িয়ে আসতে পারেন। রাঙামাটি বাংলাদেশের এক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত এলাকা। শহর থেকে শুভলং ঝরনায় যাওয়া যায় নৌপথে। দুই উঁচু পাহাড়ের মাঝ দিয়ে নৌযান চলার সময় দূর পাহাড় থেকে আদিবাসী গ্রামগুলোকে ছবির মতো মনে হবে। রাঙামাটির প্রতি পদেই দেখতে পাবেন আদিবাসীদের প্রথাগত জীবনযাত্রা। কাপ্তাই জাতীয় উদ্যান, কর্ণফুলী পেপার মিল ও কর্ণফুলী পানিবিদ্যুৎকেন্দ্র। সেন্ট মার্টিন বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ। সেন্ট মার্টিনের কিছু দূরেই আছে ছেঁড়াদ্বীপ। পানির রং একদিকে নীল, তো কিছুটা পরেই মনে হয় সবুজ। এই শীতে নবদম্পতিরা মধুচন্দ্রিমা সেরে আসতে পারেন এসব জায়গায়। দেশের নানা স্থানে অনেক রিসোর্ট হয়েছে। বেসরকারি বা উন্নয়ন সংস্থার রেস্টহাউস বা বাংলো তো আছেই।

 এই পর্যটন মৌসুমে বিভিন্ন পর্যটন সংস্থা আয়োজন করেছে নানা ভ্রমণ প্যাকেজের।

দ্য গাইড ট্যুরস লিমিটেড
এ সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাসান মনসুর জানালেন তাঁদের প্যাকেজ সম্পর্কে। ১. ঢাকা-বান্দরবান-ঢাকা, কটেজে বাঁশের ঘরে। ২. ঢাকা-সুন্দরবন-ঢাকা, তিন দিন দুই রাত, ১০ হাজার থেকে ১৪ হাজার টাকা।
দ্য বেঙ্গল ট্যুরস লিমিটেড
এ প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মতিউর রহমান জানালেন তাঁদের প্যাকেজ সম্পর্কে। ১. ঢাকা-সুন্দরবন-ঢাকা, চার রাত তিন দিন, ১০ হাজার ৫০০ টাকা।
ফয়’স লেক রিসোর্ট
ফয়’স লেক রিসোর্টের জ্যেষ্ঠ বিপণন ব্যবস্থাপক ফারহানুল কে চৌধুরী জানালেন, প্রতি রাত যাপন চার হাজার থেকে আট হাজার ৫০০ টাকা এবং রিসোর্ট বাংলোয় প্রতি রাত চার হাজার ৫০০ থেকে ছয় হাজার টাকা।
রিভার অ্যান্ড গ্রিন ট্যুরস
এ প্রতিষ্ঠানের পরিচালক মহিউদ্দিন হেলাল জানান, ঢাকা-কক্সবাজার-ঢাকা, তিন রাত দুই দিন, ছয় হাজার ৫০০ টাকা। ঢাকা-সেন্ট মার্টিন-ঢাকা, তিন রাত দুই দিন পাঁচ হাজার ৯০০ টাকা। ঢাকা-সুন্দরবন-ঢাকা, চার রাত চার দিন, ১১ হাজার ৯০০ টাকা।
হাকিল ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেল
এ প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমান জানান, তাঁরা মূলত টেইলর মেইড প্যাকেজ, অর্থাৎ ভ্রমণকারীর পছন্দমতো দেশে-বিদেশে যেকোনো ভ্রমণের আয়োজন করেন। আছে নবদম্পতিদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থাও।
সুন্দরবন ট্যুরস অ্যান্ড রিসোর্ট
এ প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সালেহ মাহমুদ মিঠু জানান, ঢাকা-কুয়াকাটা-শরণখোলা-কচিখালী-কটকা-ঢাকা পাঁচ দিন পাঁচ রাত, ১২ হাজার ৮০০ টাকা।
এসব প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ওয়েবসাইট থেকে জেনে নিতে পারবেন আরও তথ্য।

0 comments:

Post a Comment