Saturday, April 11, 2015

গাজীপুর ভ্রমনে গেলে যে স্থানটি আপনাকে মুগ্ধ করবেই!


ঢাকা জেলার খুব কাছের একটি জেলা হচ্ছে গাজীপুর। এ জেলাতে রয়েছে অনেক গুলি দর্শনীয় স্থান যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ভাওয়াল ন্যাশনাল পার্ক। গাজীপুর ভাওয়ালের এই ন্যাশনাল পার্কটি প্রাকৃতিক বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এখানকার প্রাকৃতিক বন, জীবজন্তু আর পশুপাখি সহজেই আপনাকে মুদ্ধ করে ছাড়বে। আপনি ইচ্ছে করলেই খোলা হাওয়ায় প্রকৃতির এই সৌন্দর্যে নিজেকে ভাসিয়ে দিতে পারেন! ঘুরে আসতে পারেন নিজে অথবা পরিবার পরিজনদের সাথে নিয়ে। চলুন জেনে নেই মনোমুদ্ধকর এই প্রাকৃতিক বিনোদন কেন্দ্রটি সম্পর্কে।

ভাওয়াল ন্যাশনাল পার্কটির অবস্থানঃ
ঢাকা শহর থেকে প্রায় চল্লিশ কিলোমিটার দূরে ও গাজীপুর সদর থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে জয়দেবপুরে গাজীপুর ন্যাশনাল পার্ক টির অবস্থান। ঢাকা ময়মনসিংহ সড়কের পাশে এ পার্কটি অবস্থিত হওয়ায় অতি সহজে এবং ঢাকা থেকে অল্প সময়ে ঘুরে আসতে পারেন। ঢাকা থেকে ময়মনসিংহগামী যেকোনো বাসে চড়ে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের ফটকের সামনেই নামা যায়। এ ছাড়া ঢাকার গুলিস্তান থেকে প্রভাতী বনশ্রী পরিবহনসহ বেশ কয়েকটি বাস চলে এ পথে। ভাড়া ৫০-৬০ টাকা। নিজস্ব গাড়িতে গেলে জয়দেবপুর চৌরাস্তা ছাড়িয়ে অল্প কিছু দূর গেলে হাতের ডানে পড়বে এর প্রধান প্রবেশপথ।

মুগ্ধ করার মত যা যা রয়েছে এই প্রাকৃতিক বিনোদন কেন্দ্রটিতেঃ
ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের মূল উদ্ভিদ হলো শাল। প্রায় ২২০ প্রজাতির গাছপালা আছে এ বনে। এর মধ্যে ৪৩ প্রজাতির বিভিন্ন রকম গাছ, ১৯ প্রজাতির গুল্ম, ৩ প্রজাতির পাম, ২৭ প্রজাতির ঘাস, ২৪ প্রজাতির লতা, ১০৪ প্রজাতির ঔষধি গাছ। জীব বৈচিত্র্যেরও কমতি নেই এ বনে। প্রায় ১৩ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ৯ প্রজাতির সরীসৃপ, ৫ প্রজাতির পাখি ও ৫ প্রজাতির উভচর প্রাণীও রয়েছে এ বনে। একসময় ভাওয়াল উদ্যানে পাওয়া যেত ব্লাক প্যান্থার, চিতা বাঘ, ময়ূর, হাতি। ক্রমাগত বন উজাড়ের ফলে দিনে দিনে এর পরিধি কমে আসায় এ বন থেকে বিলুপ্ত হয়েছে নানান বন্যপ্রাণী।

চলো হারিয়ে যাই প্রকৃতির মাঝেঃ
সারি সারি বৃক্ষের মাঝে পায়ে চলা পথ। হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে পড়লে বিশ্রামের জন্য আছে বেঞ্চ কিংবা ছাউনি। বনের মাঝে কোথাও কোথাও চোখে পড়বে ধানক্ষেত। কোথাও আবার পুকুর কিংবা ছোট আকারের লেক। এ ছাড়া ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের ভেতরে আছে বেশ কয়েকটি বনভোজন কেন্দ্র। এখানকার কটেজগুলোও বাহারি নামের। বকুল, মালঞ্চ, মাধবি, চামেলী, বেলী, জুঁই ইত্যাদি। নামের মতো এগুলোর পরিবেশও ভিন্ন আমেজের।

পিকনিক স্পট কিংবা রেস্ট হাউস ব্যবহার করতে হলে বন বিভাগের মহাখালী কার্যালয় থেকে আগাম বুকিং দিয়ে আসতে হয়। এ উদ্যানের প্রবেশ মূল্য জনপ্রতি ৬ টাকা। প্রাইভেট কার কিংবা মাইক্রোবাস নিয়ে প্রবেশ করতে লাগবে ৩০ টাকা আর মিনি বাসের জন্য প্রবেশমূল্য ৫০ টাকা। দুই-তিনজন এখানে বেড়াতে গেলে উদ্যানের বেশি ভেতরে না যাওয়াই ভালো।

বন্ধুরা,  তাহলে আজই বেরিয়ে পড়ুন গাজীপুরের ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানটি দেখার জন্য। আর অবশ্যেই ঘুরে আসার পর গাজীপুর ভাওয়াল ন্যাশনাল পার্কটির জানা অজানা আমাদের সাথে শেয়ার করতে একদম ভুল করবেন না।

0 comments:

Post a Comment